আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
রাশিয়া আন্তমহাদেশীয় ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম) হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করেছে কিয়েভ। ইউক্রেনের নিপ্রো শহরে এই ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে বলে জানানো হয়েছে।
বিশ্বের ইতিহাসে এর আগে কখনো কোনো সংঘাতে আইসিবিএম ব্যবহার করার নজির নেই। অত্যন্ত দূরপাল্লার এ ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র মূলত পারমাণবিক ওয়ারহেড বহন করে এবং হাজার হাজার কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে হামলার জন্য এগুলো তৈরি করা হয়েছে।
ইউক্রেনের বিমান বাহিনী দাবি করেছে, স্থানীয় সময় সকাল ৫টা থেকে ৭টার মধ্যে রাশিয়ার আস্ট্রাখান অঞ্চল থেকে ৯টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়। এরমধ্যে একটি ছিল আন্তমহাদেশীয় ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র। অর্থাৎ, ইউক্রেনের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে মাত্র ৫০০ মাইল পাড়ি দিতে হয়েছে এটিকে।
দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, দিনিপ্রোর ‘গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগুলোকে’ লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। যদিও কোন ধরনের আইসিবিএম দিয়ে হামলা চালানো হয়েছে বা কী ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে– সেসম্পর্কে কিছু জানানো হয়নি।
তবে মার্কিন গণমাধ্যম এবিসি নিউজ পশ্চিমা কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, ইউক্রেন তথ্য অতিরঞ্জিত করেছে, আসলে স্বল্প-পাল্লার ব্যালেস্টিক মিসাইল এই আক্রমণে ব্যবহার করেছে রাশিয়া। এর আগেও ইউক্রেনের বিরুদ্ধে মস্কো এ ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে।
রাশিয়ার হাতে থাকা আইসিবিএম’গুলো ৬ হাজার ২০০ মাইলের বেশি দূরের লক্ষ্যে আঘাত হানতে পারে। অর্থাৎ, আস্ট্রাখান অঞ্চল থেকে আইসিবিএম ছুঁড়ে যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব উপকূলে অনায়সে আঘাত করতে সক্ষম। সুতরাং, সত্যিই যদি এই ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়— তাহলে মস্কো যুক্তরাষ্ট্রকেই এই বার্তাই দিতে চেয়েছে।
সম্প্রতি ইউক্রেনকে যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি অ্যাটাকমস ক্ষেপণাস্ত্র রাশিয়ার অভ্যন্তরে নিক্ষেপের অনুমতি দিয়েছে ওয়াশিংটন। তাই মস্কো এ ধরনের পাল্টা বার্তা দেওয়ার পথে হাঁটতে পারে।
১৯৫০ এর দশকে যখন স্নায়ুযুদ্ধ তুঙ্গে তখন থেকে তোড়জোড় শুরু হয় আইসিবিএম নির্মাণের। ওই সময়, একে-অন্যকে পারমাণবিক অস্ত্র দিয়ে ধ্বংসের হুমকি দিচ্ছিল যুক্তরাষ্ট্র ও সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন।
মার্কিন কংগ্রেসের এক গবেষণা অনুযায়ী, বর্তমানে রাশিয়ার কাছে ৩২৬টি আইসিবিএম রয়েছে।
দ্য গার্ডিয়ান
Leave a Reply