মিজানুর রহমান মিজান, (চিলমারী, কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধিঃ
কুড়িগ্রামের চিলমারীতে ব্রহ্মপুত্র তীরে নির্মাণাধীন নদী বন্দরের নির্মাণ কাজে নান অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। বন্দরের টার্মিনাল ভবনের ছাদ রাতের আধারে নিম্নমানের পাথর বালু দিয়ে ঢালাই দেয়ার সময় কয়েক দফায় এলাকাবাসী বাধা দেয়ার পর কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন।
জানা গেছে,বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের বাস্তবায়নে চিলমারী এলাকায়(রমনা,জোড়গাছ,রাজিবপুর, রৌমারী,নয়ারহাট) নদী বন্দর নির্মাণ প্রকল্পের বরাদ্দ দেয়া হয়। যার বাস্তবায়নকাল জুলাই ২০২১ হতে ডিসেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত এবং প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয় ২৩৫ কোটি ৫৯লক্ষ টাকা। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে আরএডিপি বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল ৩২ কোটি টাকা। নদী বন্দর নির্মাণের কাজ শুরুর পর থেকেই বিভিন্ন কাজে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। বন্দরের টার্মিনাল ভবনের ছাদ রাতের আধারে নিম্নমানের পাথর বালু দিয়ে ঢালাই দেয়ার সময় কয়েক দফায় এলাকাবাসী বাধা দেয়ার পর কাজ বন্ধ করে দিয়েছে বলে জানা যায়।
সরেজমিনে রোববার রাতে দেখা যায়,উপজেলার নৌ-বন্দর টার্মিনাল ভবন নির্মানের কাজ চলছে। পাশেই রাখা হয়েছে নিম্নমানের ময়লা যুক্ত সাইজের তুলনায় বড় পাথর। আর সেই পাথর দিয়ে কাজ করছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান দিপু এন্টার প্রাইজ। নিম্নমানের ময়লা যুক্ত পাথর দিয়ে টার্মিনাল ভবন নির্মাণ কাজে এলাকাবাসী বাধা দিলেও তার তোয়াক্কা না করে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যাবহার করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন কাজ চালিয়ে যায়।এবং রাতের অন্ধকারেও ওইসব নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে ঢালাই চালিয়ে যাচ্ছে।এসময় এলাকাবাসী কর্মস্থলে এসে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারে বাধা প্রদান করে কাজ বন্ধ করে দেয়।
ছাদ ঢালাই মিস্ত্রী আনিছুর রহমান ও নাইট গার্ড হবিবর রহমান জানায়, রাতের বেলায় ময়লা বালু এবং নিম্নমানের বড় সাইজের পাথর দিয়ে ঢালাই করছিলেন ঠিকাদার। এসময় এলাকাবাসীরা এসে কাজ বন্ধ করে দেয়।স্থানীয় কয়েকজন বলছেন শুরুতে কাজ সঠিকভাবে চললেও শেষে এসে ময়লাযুক্ত বড় পাথর দিয়েই ঢালাই চালানো হয়। কাজ বন্ধ করে দেয়ারপর স্থানীয় মোফাখ খাইরুল ইসলাম স্বাগত, মুরশীদ আলম শিমুল, আলম মিয়া, ফরিদুল ইসলাম, এব্রাহিম, ইদ্রিস আলীসহ অনেকে জানান, কাজের মান একেবাড়ে নিম্নমানের হওয়ায় আমরা বেশ কয়েকবার কাজ বন্ধ করে দিলেও তারা আমাদের অনুপস্থিতে কাজ চালিয়ে গেছে। এখানে ময়লাযুক্ত বড় সাইজের পাথর দিয়ে কাজ করা হচ্ছে। যা ছাদ ঢালাইয়ের অনুপযোগী। ঢালাইয়ের সময় পাথর ও বালুর সাথে যে সিমেন্ট দেয়া হচ্ছে তাও পরিমানের তুলনায় অনেক কম। সাধারন মানুষকে ফাঁকি দিতে রাতের আধারে তারা নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ করছে। এটি আমাদের এলাকার সম্পদ যা দেখার দ্বায়িত্ব আমাদের সকলের। তাই আমরা সকলে একত্রিত হয়ে কাজটি বন্ধ করে দিয়েছি।
নদী বন্দর নির্মাণ প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা উপ-সহকারী প্রকৌশলী দাউদ ইসলাম কাজে অনিয়মের কথা অস্বীকার করে বলেন,টার্মিনাল ভবনের ছাদ ঢালাইয়ের কাজে কোন অনিয়ম করা হয়নি। কাজ চলা অবস্থায় স্থানীয় কিছু লোকজন এসে মিষ্টি খেতে চায়। মিষ্টির জন্য বরাদ্দ নাই জানালে তারা কাজ বন্ধ করে দেয়।
Leave a Reply