আমিনুল ইসলাম, ফুলবাড়ি প্রতিনিধি :
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে ডাকাতির ঘটনায় ডাকাতদল তাদের দাবির টাকা না পেয়ে বাড়ি মালিকের বড় ছেলে সুপারি ব্যবসায়ীকে মারধর করে। এক পর্যায়ে ওই ব্যবসায়ী ডাকাতদলের এক সদস্যকে চিনে ফেলায় তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে। পরে কিছু নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে পালিয়ে যায়।
গত সোমবার দিবাগত রাত ২টায় উপজেলার নগরাজপুর গ্ৰামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত হামিদুল ইসলাম আলে (২৭)। ও ফুলবাড়ী ডিগ্রী কলেজের স্নাতক শেষ বর্ষের ছাত্র এবং সুপারি ব্যবসায়ী।তিনি ওই গ্ৰামের শফি উদ্দিনের পুত্র।
পুলিশ ও শফি উদ্দিন জানায়, রাত ১০টার দিকে বাড়ির সবাই ঘুমিয়ে পড়েন।রাত যখন গভীর হয়ে যায় তখন ১০-১২ জনের একটি ডাকাত দল মুখোশ পড়ে সশস্ত্র তাঁর বাড়িতে হানা দেয়। বাড়ির চারপাশ ঘর দিয়ে আবদ্ধ থাকায় রান্না ঘরের জানালার গ্রীল কেটে বাড়িতে প্রবেশ করে। ঢুকেই তারা তাকেসহ স্ত্রী হাসিনা বেগম, বড় ছেলে আলেফ উদ্দিন, ছোট ছেলে আনিছুর রহমান এবং ছেলে বউ সোমাইয়া বেগমের হাত পা ও মুখ বেঁধে নারী ও পুরুষকে আলাদা করে।এ্যপর টাকা ও স্বর্ণালংকার দাবি করে। না পেয়ে মারধর শুরু করে । কিছু ডাকাত সদস্য ঘরের বিভিন্ন স্থানে তল্লাশি চালায়।এক পর্যায়ে তাদের ড্রয়ারে থাকা ১২ হাজার টাকা, ছয় ভরি স্বর্ণালংকার লুটে নেয় । মহিলাদের পরনে থাকা তিন ভরি স্বর্নালংকার ছিনিয়ে নেয়। বাড়ির বড় ছেলে হামিদুল ইসলাম আলের কাছে ডাকাত দল ব্যাংক থেকে তুলে আনা ২৫ লাখ টাকার হদিস চায়। এ সময় তিনি নির্বিকার থাকলে মারধর শুরু করে ডাকাত দল। এক পর্যায়ে তিনি ডাকাত দলের এক সদস্যকে চিনে ফেলেন। অবস্থা বেগতিক দেখে ডাকাতল বেদম মারধর শুরু করে। এক পর্যায়ে মুখে কাপড় গুজে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করে সটকে পড়ে ।
নিহতের মা হাসিনা বেগম বলেন, তারা টাকা ও স্বর্ণালংকার নেয়ার পর আরো টাকার দাবিতে আমার চোখের সামনে ছেলেকে মারধোর করে । নাক মুখ গলা চেপে ধরে শ্বাসরোধে হত্যা করে। প্রশাসনের কাছে অনুরোধ আমার ছেলের হত্যাকারীদের যেন দ্রুত গ্রেপ্তার করা হয়। একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়,শফিউদ্দিন ও তার ছেলে আলেফ উদ্দিন একজন বড় মাপের সুপারি ব্যবসায়ী। ব্যবসার কারণে শফিউদ্দিন ব্যাংক থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা তুলেন। টাকা তোলার সময় থেকে ডাকাতেরা তাকে অনুসরণ করেন। ধারণা করা হচ্ছে ডাকাতির আগে তার বাড়ির সামনের পানির ট্যাংকে চেতনা না নাশক মিশিয়ে দেওয়া হয়। অন্যান্য দিন অনেক রাত অবধি জেগে থাকলেও সেদিন তারা তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়েন। এরই সুযোগে ডাকাল দল বাড়িতে হানা দেয়।
ফুলবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সানোয়ার হোসেন জানান, আমি ঘটনাস্থলে রয়েছি। নিহতের লাশ সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে । এ বিষয়ে থানায় মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
কুড়িগ্রামের পুলিশ সুপার মাহফুজুর রহমান জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ডাকাত দল রান্না ঘরের জানালার গ্রীল কেটে বাড়িতে প্রবেশ করেছে। বাড়ির মালিকের ছেলে আলেফ উদ্দিন হয়তো ডাকাতদের চিনতে পেরেছেছিলেন। সে কারনে ডাকাতরা তাকে মেরে ফেলতে পারে। অনুসন্ধান করে এই সংঘবদ্ধ ডাকাত দলকে গ্রেফতারের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
Leave a Reply